উপমহাদেশের গাজরের হালুয়াকে মিষ্টান্ন পুডিং বলা হত। গ্রেট করা গাজর, দুধ, চিনি, ঘি ও গরম মসল্লার সমন্বয়ে এই হালুয়া তৈরী করা হয়। প্রায় সময়ই বড় বড় হোটেল, রেস্তরা কিংবা বাসার রেসিপিতে কাঠ বাদাম, পেস্তা বাদাম ও কিসমিছের কুচি দিয়ে গাজরের হালুয়ার গার্নিশ করা/ ড্রেসিং দেয়া/ সাজানো হয়।
গাজরের হালুয়া আমরা যেকোন অনুষ্ঠান মেহমানদারি, পার্টি কিংবা রান্না করে নিজের পরিবার নিয়ে উপভোগ করি। আচ্ছা সত্যি করে বলুন তো কে কে এর আগে গাজরের হালুয়া রান্না করেছেন। দু একবার করলে বা কোনদিন না করলে নিচে কমেন্টস করে জানান।
গাজরের হালুয়া আমাদের অনেকের পছন্দের খাবার। গাজর আমরা রান্না করে খাই আবার সালাদ হিসেবে কাঁচাও খাই। গাজরের পুষ্টিগুন অনেক, অনেকে এটাকে ভেষজ ঔষধ হিসেবেও খায়। সব কথার শেষ কথা গাজর আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
গাজরের পুষ্টিগুন
অনেক চিকিৎসকের মতে, গাজর হল সুপার ফুড বা খাবারের রাজা। শীতকালে সাধারণ রোগ থেকে বেচে থাকার জন্য খাবারের তালিকার সব ভালো সবজি হল গাজর।
গাজরে থাকা ভিটামিন ও মিনারেল আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, যার ফলস্বরুপ আমরা সর্দি, ঠান্ডা কাশিসহ নানা প্রকার সাধারণ রোগ থেকে মুক্ত থাকি। এ সকল রোগের জন্য কিছু কিছু সবজি আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায। এ সবজি গুলোর ভিতরে গাজর একটি সবজি।
গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’। তাছাড়া এই গাজরের থাকা বিটা ক্যারোটিন আসাদের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। গাজর আমাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি হ্রাসসহ অন্যান্য সমস্যায় বাধা দেয়।
গাজরের ক্যারটিনয়েড অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে এবং রক্ত শুদ্ধি করনের সাহায্য করে। এছাড়াও নানা প্রকার গুনাগুন গাজরে আছে। গাজরের বিস্তারিত গুনাগুন পড়তে ````````` পোস্ট পরুন।
আচ্ছা আপনারা কেউ গাজরের হালুয়া দিয়ে রুটি খেয়েছেন। না খেলে একবার খেয়ে দেখবেন। ঘিয়ের ঘ্রানের সাথে গাজরের হালুয়া ও রুটি আমার শীতকালীন প্রিয় খাবার। হয়ত অনেকেই গাজরের হালুয়া ও রুটি খেয়েছেন।
শীতকাল আসার সাথে সাথে বাজারে গাজরের ছড়াছড়ি আর বেচাকেনার ধুম পরে যায়। এ সময় গাজরের দাম খুব কম থাকে। এমন সময়ে কম খরচ ও সহজেই তৈরী করতে পারেন গাজরের হালুয়া যদি বাসায় থাকে ঘি। তাহলে চলুন শিখে ফেলি সহজে সুস্বাদু গাজরের হালুয়ার রেসিপি।
উপকরণ
১.৫ কেজি গাজর
৭৫০ গ্রাম দুধ
৮-৯ চা চামচ ঘি
১০-১২ টি এলাচ
৩-৪ টুকরা দারচিনি
২ টেঃ চামচ কিসমিস ( ১ টেঃ চামচ রান্নার জন্য রাখুন আর বাকি ১ টেঃ চামচ কুচি কুচি করে ডেকোরেশনের জন্য রাখুন)
৮-৯ চা চামচ চিনি (মিষ্টি আপনার পছন্দমতো কম-বেশি করে নিবেন)
১ টেঃ চামচ কাঠ বাদাম ও পেস্তা বাদাম কুচি ( হালুয়ার উপরে ড্রেসিং দেয়ার জন্য)
২ টেঃ চামচ খেজুর কুচি ( হালুয়ার ডেকোরেশনের জন্য; না দিলেও হবে।)
প্রস্তুত প্রণালি
প্রথম ধাপঃ
কাঠ বাদাম, পেস্তা বাদাম, খেজুর ও অর্ধেক কিচমিচ কুচি করে রাখুন।
দ্বিতীয় ধাপঃ
গাজর ভাল করে ধুয়ে ছিলে নিন। এবার গ্রেডার দিয়ে গ্রেড করে নিন। (গ্রেডার না থাকলে কুচি কুচি করে কাটুন)
তৃতীয় ধাপঃ
একটি পাত্রে তরল দুধের সাথে এলাচ এবং দারচিনি দিয়ে মিডিয়াম হিটে ঘন করে জাল দিন।
চতুর্থ ধাপঃ
অন্য একটি পাত্রে ঘি গরম করে গ্রেট/কুচি করা গাজর দিয়ে অল্প তাপে ১০-১৫ মিনিট ভেজে নিন। মনে রাখবেন গাজর ভাজি করার সময় গাজর আধা সিদ্ধ হয়ে যাবে ও তরল দুধ ঘন করতে হবে।
পঞ্চম ধাপঃ
গ্রেড করা গাজর/ গাজর কুচি ভাজা হয়ে গেলে চিনি ও জাল করা ঘন দুধ মিশিয়ে চুলার তাপ অল্প করে আস্তে আস্তে নাড়তে থাকুন।
ষষ্ঠ ধাপঃ
গাজরের ভিতরে দুধ শুকিয়ে গেলে চুলা বন্ধ করে পরিবেশন ডিসে/পাত্রে নামিয়ে ফেলুন।
সপ্তম ধাপঃ
হালুয়ার উপরে কাঠ বাদাম কুচি, পেস্তা বাদাম কুচি, কিচমিছ কুচি ও খেজুর কুচি ছিটিয়ে দিয়ে ঠান্ডা হলে পরিবেশন করুন।
আকর্ষনীয় পরিবেশনের আইডিয়াঃ
১। হালুয়া পরিবেশন ডিসে নামিয়ে হালকা ঠান্ডা হলে গোল গোল করে লাড্ডুর সাইজে বানিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।
২। খাবারটি চারকোনা সাইজ করে উপরে একটি লবঙ্গ ও চেরিফল/কিচমিচ/কাঠবাদাম ও পেস্তা বাদাম কুচি উপরে দিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।
৩। ছোট বাটিতে পরিমাণমতো হালুয়া দিয়ে উপরে হালকা গোলাকার করে সাজিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।
৪। ছোট কেকের ডাইসের বা বিস্কুটের ছাচে ভিতরে ভরে নানা প্রকার আকর্ষনীয় সাইজ করে পরিবেশন করতে পারেন।