সাধারণত বেসন ও হালকা চালের গুড়া মিশিয়ে তেলে ভেজে সিরায় ডুবিয়ে বুন্দিয়া তৈরি করা হয়। বুন্দিয়া অঞ্চলভেদে বোঁদে বা বুরিন্দা, বুন্দি ইত্যাদি নামে পরিচিত। বুরিন্দার উৎপত্তিস্থল বলা হয় ভারতীয় উপমহাদেশ কে। এটি তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশের বাংলাদেশ, ভারতের পশ্চিম বঙ্গে বেশি পরিচিতি পায়।
'বোঁদে' শব্দটি সংস্কৃত ভাষার শব্দ যা 'বিন্দুক' থেকে এসেছে। বোঁদে ছিল ভারতের অন্যতম প্রাচীন মিষ্টান্ন খাবার। প্রাচীন কালে সেখানে বিরি কলাই গুঁড়ো, চিনি ও ঘি দিয়ে এই মিষ্টান্ন তৈরী করা হত।
বোঁদে বা বুন্দিয়া সাধারণত লালচে রঙের হয়। ঘি দিয়ে ভাজা বোঁদে/ বুন্দিয়া জাফরান মেশানো চিনির রসে ডোবালে লালচে হয়। আবার ঘি না দিয়ে তেলে ভাজলেও এটা লালচে হয়। প্রচলিত লালচে বুরিন্দা/বোঁদের একটি বিশেষ প্রকার হল সাদা বুরিন্দা/বোঁদে।
সাহিত্যে আছে, যে রামকৃষ্ণ পরমহংস সাদা বুরিন্দা খেতে অত্যন্ত ভালোবাসতেন।
রমজান মাসে বুন্দয়া
রমজানে ইফতারের টেবিলে বুন্দিয়া ছাড়া তো আমার ইফতারের মজা অপূর্ণতাই রয়ে যায়। ইফতারে ঝাল ও মিষ্টি মুড়ি ছাড়া ইফতার জমেই না। আপনার কি এমন হয়? ইফতারের সাথে বুন্দিয়া দিলে ইফতারের স্বাদের মিষ্টির একটি ফ্লেভার আনে। যা ফলেই ইফতারের স্বাদ অনেকটা বেড়ে যায়। বেশির ভাগ সময় আমরা এই বুন্দিয়া বাহির থেকে কিনে আনি।
কিন্তুু দোকানের বুরিন্দা কতটা স্বাস্থ্যকর তা কি আমরা বুঝতে পারি। স্বাস্থ্যকর হলেও আমাদের মনে একটা সন্দেহ রয়েই যায়। তাই ঘরে বসেই খুব অল্প সময়ে স্বাস্থ্যকর ভাবে বুরিন্দা তৈরীর রেসিপি শেয়ার করবো। তাহলে চলুন জেনে নেই বুরিন্দা রেসিপি –
বুরিন্দা রেসিপি উপকরন :
২ কাপ বেসন
২ কাপ চিনি সিরার জন্য
লবন স্বাদমত
১ চামচ হলুদের গুড়া
পরিমানমত পানি
২ টেবিল চামচ তেল
২ ফোটা ফুড কালার
পরিমাণমতো তেল ( ভাজার জন্য)
১ চামচ বেকিং সোডা
বুরিন্দা রেসিপির ধাপ
প্রথমে একটি বাটিতে বেসন নিতে হবে।
এরপর বেসনের সাথে লবন, হলুদ গুড়া, বেকিং সোডা দিয়ে হাত দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে।
এখন অল্প করে পানি দিয়ে একটি পাতলা ডো তৈরি করে নিতে হবে।
এবার ডো ১৫ মিনিট কাপড় বা ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রেখে দিতে হবে।
ডো থেকে অল্প পরিমাণে ডো নিয়ে আপনার পছন্দের ফুড কালার মিশিয়ে নিতে পারেন।
একটি কড়াইয়ে পর্যাপ্ত পরিমানে তেল দিয়ে গরম করতে হবে।
তেল গরম হয়ে আসলে একটি ছাঁকনির সাহায্যে ডো দিতে হবে।
ছাকনি দিয়ে ডো দিলে এটা ছোট ও বুরিন্দার মত হয়ে তেলে পরবে।
এবার দেখুন বুরিন্দা গুলো ধীরে ধীরে তেলের উপর ভেষে উঠছে।
বুন্দিয়া হালকা কালার করে ভেজে উঠাতে হবে।
বুরিন্দার সিরা:
একটি পাত্রে চিনি মেশানো পানি জ্বাল করতে হবে।
প্রায় দশ থেকে পনের মিনিট জ্বাল করার পর সিরা আঠালো হয়ে আসলে বুন্দিয়া ঢেলে দিতে হবে।
হালকা করে একবার নেড়ে তাপ বন্ধ করে দিতে হবে।
চুলা বন্ধ করার পর বুন্দিয়া ঠান্ডা হলে এই বুন্দিয়া খাওয়ার জন্য উপযোগী হবে।
এবার বুন্দিয়া গুলো ঠান্ডা হবার পর একটি পাত্রে রেখে নরমাল ফ্রিজে রেখে সম্পন্ন রমজান মাস খেতে পারবেন।