পাকোড়ার সম্পর্কে ধারণা
পাকোড়া একটি হালকা নাস্তা জাতীয় মুখরোচক খাবার। এই খাবার মূলত ভারতীয় উপমহাদেশীয় খাবার, যা ভারতের বিভিন্ন ফুটপাতসহ নামকরা রেস্টুরেন্টেও পরিবেশন করে থাকে। ভারতীয় রাস্তার পাশের দোকান গুলোর পাকোড়া ভোক্তাদের ব্যাপক পছন্দের খাবার হিসেবে জায়গা পেয়েছে।
ভারতীয় উপমহাদেশীয় খাবার পাকোড়া, বর্তমানে এশিয়ায় ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। এছাড়াও এ খাবার পুরো পৃথিবীতে জনপ্রিয় হালকা নাস্তা হিসেবে জায়গা পাচ্ছে। পাকোড়া বিভিন্ন নামে বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশে পরিচিত। এর কিছু নাম হলোঃ পাকোডা, পিকড়া, ভাজিয়া, পাকোডি, ফাকুড়া, ফুলুড়ি ইত্যাদি। পাকোড়া হালকা নাস্তা জাতীয় খাবার বলেই বেশি পরিচিত।
নাস্তা হিসেবে পাকোড়া
পাকোড়া আমার খুব প্রিয় একটি খাবার। আমার মনে হয় সবাই এই পাকোড়া খেতে ভালোবাসে। মনে করেন, বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে, নিশ্চয় আপনার চা খেতে ইচ্ছে করবে। আর চায়ের সাথে যদি হালকা নাস্তা হিসেবে থাকে গরম গরম পাকোড়া। তাহলে কেমন হবে বলুন তো? পরিবেশটা তখন নিশ্চিত জমে উঠবে। পাকোড়ার সাথে জমে উঠবে আপনার বিকেলের হালকা নাস্তাও। কি ভাবছেন আমি পাকোড়া কিনতে বলবো আপনাকে? নিশ্চিত থাকেন আমি পাকোড়া কিনতে বলবো না আর আমি কোন মার্কেটিং করতে আসিনি। । আমি আপনাকে আপনার খাবারের রুচি তুলে ধরছি সাথে আমি আমার খাবারের রুচির মতবাদ বর্ণনা দিচ্ছি।
যা হোক মুল কথায় আসি আপনার বৃষ্টির দিনে কিংবা বিকেলের নাস্তায় পাকোড়া কিনতে দোকানে যাওয়ার দরকার একদম নেই। নিজের বাড়ি বসেই রান্না করে নিতে পারেন মুখরোচক খাবার পাকোড়া।
পাকোড়ার পুষ্টিগুন ও ক্ষতি
সবজি পাকোড়া অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার কেননা এতে রয়েছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা দেহের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় সবুজ শাক-সবজি রাখা উত্তম। কিন্তু ছেলে মেয়েরা অনেক সময় সবুজ শাক সবজি খেতেই চায় না। এর জন্য বাবা মায়েরা দুঃচিন্তায় পরে যায়। পাকোড়া তো ছেলে মেয়ে, ছোট বড় সবার পছন্দের একটি খাবার! সবুজ শাক দিয়ে যদি মচমচে পাকোড়া রান্না করা যায়, তাহলে কেমন হবে? যাদের শাক অপছন্দের খাবার, তারাও কিন্তু মজা করে এই পাকোড়া খাবে। তবে বেশি মাত্রায় এই খাবার না খাওয়াই ভাল। শুধু এই খাবার না, যে কোন খাবার বেশি মাত্রায় না খাওয়াই ভাল।
পাকোড়া পরিবেশনের টিপস
বন্ধু বান্ধবের জম জমাট আড্ডাতে মচমচে মুড়ি ও চায়ের সাথে মচমচে পাকোড়ার তুলনা হয়না।
শীতকালে বিকালের নাস্তা হিসেবে চায়ের সাথে রাখতে পারেন গরম গরম সবজি পাকোড়া।
মুসলমানের সবর্শ্রেষ্ট মাস রমজানে ইফতারের জন্য কম সময়ে রান্না করে ফেলতে পারেন এই রেসিপি।
বাড়িতে অতিথি আগমণ, দ্রুত নাশতা চাই, কম সময়ে রান্না করতে পারেন এই মচমচে, সুস্বাদু, মুখরোচক ও পুষ্টিকর খাবার নাস্তাটি।
অফিস থেকে বাড়ি ফিরেই খুব ক্ষুধা ক্ষুদা ভাব, ঝটপট তৈরি করে ফেলুন এই খাবার নাস্তা।
ভাত, খিচুড়ি বা অবসর সময়ে পাকোড়া খেতে ভালই লাগে সবার।
ভেজিটেরিয়ানদের অন্যতম হালকা নাস্তা হিসেবে ভেজিটেবল পাকোড়া পরিবেশন করা যায়।
ইফতারে ছোলা মুড়ির সাথে পাকোড়া মানানসই।
উপকরণ
বাঁধাকপি ২০০ গ্রাম (মিহি কুচি করে কেটে নিতে হবে বা গ্রেডার দিয়ে গ্রেড করা)
টমেটো ১ টি (কুচি কুচি করে কেটে নিতে হবে)
পেঁয়াজ ২ টি (কুচি করে কেটে নিতে হবে )
কাঁচা মরিচ কুচি ১ টেঃ চামচ
কাঁচা মরিচ বাটা ১ চা চামচ
আদা বাটা ১ চা চামচ
রসুন বাটা ১ চা চামচ
ধনেপাতা কুচি ১ টেবিল চামচ
কালোজিরা ১ চা চামচ
বেসন ১ কাপ
চাউলের গুঁড়া ১ কাপ
কর্ণ ফ্লাওয়ার বা ময়দা ১ টেঃ চামচ
লবণ স্বাদমতো
চিনি ১ চা চামচ
তেল ভাজির জন্য প্রয়োজনমতো
রান্নার ধাপ
প্রথমে একটি পাত্রে মিহি করে কাটা বাঁধাকপি রেখে জল দিয়ে হালকা সিদ্ধ করে নিতে হবে। সম্পন্ন সিদ্ধ করা যাবে না।
ঝুড়ি বা স্টেনারে বাঁধাকপি ঢেলে ভাল করে পানি ঝরাতে হবে। কোন পানি থাকা যাবে না। পানি থাকলে পাকোড়া নরম হয়ে যাবে।
এরপর একটি পাত্রে ভাপানো বাঁধাকপির সাথে কচি করা পেঁয়াজ, টমেটো কুচি, কুচি করা কাঁচা মরিচ, আদা বাটা, রসুন বাটা, কাঁচা মরিচ বাটা, কালো জিরা, হলুদ গুঁড়া, বেসন, চালের গুঁড়া, পরিমান মতো লবন, চিনি, কনফ্লাওয়ার বা ময়দা দিয়ে ভালো ভাবে মেখে নিতে হবে।
তারপর করাইয়ে প্রয়োজন মতো তেল দিয়ে গরম করতে হবে। তেল গরম হলে গেলে মাখানো বাধাকপি থেকে একটু একটু করে নিয়ে গোল গোল সাইজ করে পিয়াজু আকারে মাঝারি তাপে ভেজে নিতে হবে।
ঝাল ও লবণ টেস্ট করার জন্য প্রথমে ভাজা পাকোড়া থেকে খেয়ে দেখুন। কম বা বেশি হলে ঠিক করে তারপর ভাজুন। বেশি তাপে ভাজবেন না। কেননা বেশি তাপে ভাজলে উপরে পুড়ে যাবে কিন্তু ভিতরে কাচা থেকে যাবে ও মচমচ হবে না।
তারপর পরিবেশন পাত্রে কাসুন্দি, সস বা পছন্দের দ্রব্য দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।