সুন্দরী মহিলার কবরে বিষাক্ত সাপ- কেন?

 বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব একটি মুসলমান সুন্দরী মহিলার কবরে বিষাক্ত সাপ বের হবার কাহিনী। মহিলার লাশ কবরে নামানোর সাথে সাথে সাপ বেরিয়ে আসার ঘটনা ঘটে আজ থেকে পঁচিশ ত্রিশ বছর আগে ইরাকের একটি শহরে।

ইরাকে সুন্দরী মহিলার কবরে বিষধর ও ভয়ঙ্কর সাপ

ইরাকের এক শহরে একটি মুসলিম মহিলার মৃত্যু হয়। মহিলাটির মৃত্যুর পর মৃত ব্যক্তিকে গোসল করানোর, জানাজা এবং কবরে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত সবকিছুই স্বাভাবিক ছিল।

কবরের পাশে লাশ নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত সমস্যা হয়নি বা আসেনি। জানাজা শেষে উক্ত মহিলার জন্য একটি কবর খনন করা হয়। কবর খনন করা শেষ হলে উক্ত মহিলা লাশ কবরের পাশে নিয়ে আসা হয়।

মহিলার লাশটি কবরের পাশে নিয়ে আসার পর দেখা গেল কবরের ভিতর একটি অদ্ভুত রকমের বিষাক্ত ও ভয়াবহ সাপ রয়েছে। কবরে বিষাক্ত সাপ দেখতে অত্যন্ত ভয়ঙ্কর যা দেখে সবাই ভয় পেয়ে যায়।

সাপটিকে তাড়ানোর জন্য সবাই অনেক চেষ্টা করল কিন্তু কিছুতেই সাপটিকে তারানো গেলো না। গ্রামের ও জানাজায় উপস্থিত সকল লোক অন্য কোন উপায় না পেয়ে কবরের পাশে অন্য একটি কবর খনন করতে শুরু করলো।

সকল কবরেই বিষাক্ত সাপ

দ্বিতীয় কবরে লাশ নামানোর পূর্ব পর্যন্ত কোন সাপ, প্রাণী বা অন্য কোনো কিছুই দেখা গেল না। কিন্তু লাশ নামানোর পূর্ব মুহূর্তে আবার দেখা গেল আগের কবরের মত এই কবরেও বিষাক্ত সাপ বসে আছে।

এরপর প্রথম ও দ্বিতীয় কবরের পাশে তৃতীয় কবর খনন হলো কিন্তু সেখানেও পূর্বের মত আরেকটি বিষাক্ত সাপ বসেছিল। ঘটনাটি যারা নিজের চোখে দেখে ছিল তারা বলেছিল যে এভাবে দশটি খনন করা হয়েছিল।

কিন্তু প্রথম কবরের মত প্রতিটা কবরেই কোথায় থাকে যেন সব চলে আসতো। সর্বশেষে এলাকাবাসী উৎসাহী ও বাধ্য হয়েই এই ঘটনার আসল রহস্য কি তা জানতে একজন বিখ্যাত আলেমের নিকট গেলেন।

পুরো ঘটনা শুনে সেই আলেম ব্যক্তি বললেন, আপনারা এই লাশের জন্য যতই কবর খনন করেন না কেন, প্রতিবারই তার কবরে সাপ চলে আসবে। তাই উক্ত মহিলার লাসের জন্য প্রথম যে কবর খনন করা হয়েছিল সেটাই দাফন করা হোক।

আলেম বা হুজুরের কথামতো যখনই লাশটিকে খাটিয়া থেকে কবরের মাটি সোয়ানো হল, সাপটি শান্ত হয়ে লাশের জন্য এক পাশে জায়গা করে দিলেন।

সাপ দ্বারা লাশের জিহ্বা দংশন

ইরাকের সুন্দরী মহিলার লাশটি কবরে রেখে মানুষ কবর থেকে উঠে যাওয়ার পর সাপটি লাশের মুখের কাপড় খুলে জিহ্বা পেঁচিয়ে ধরল। এই ঘটনাটি দেখে সবাই অবাক হয়ে বলাবলি করতে লাগল, ঘটনা কি? কেন এমন হচ্ছে!

লাশ দাফন করা লোকদের মধ্যে ওই মহিলার স্বামীও ছিলেন। ওই মহিলাটির স্বামীকে সবাই জিজ্ঞাসা করলেন, আপনার স্ত্রীর কবরে বিষাক্ত সাপ আসার কারন কি? আপনি কিছু বলতে পারবেন? আপনি কি কিছু জানেন না।

মহিলার কবরে সাপের আক্রমনের কারণ

উপস্থিত লোকদের সকল প্রশ্নের উত্তরে মহিলাটির স্বামীর চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বলতে লাগলেন, আমার স্ত্রী আমার সাথে বেঁচে থাকাকালীন কখনো ভালো আচরণ করতেন না।

দীর্ঘ ৩৫ বছরের দাম্পত্য জীবনে আমার স্ত্রী আমার সাথে অনেকটা গোলাম এবং মুনিবের মতো আচরণ করতেন। কথায় কথায় আমাকে ধমক এবং খারাপ আচরণ করতো। আমার অন্তরে আঘাত দিয়ে সে সবসময় কথা বলতো।

কিন্তু আমি ধৈর্যধারণ করতাম। কখনো প্রতিউত্তরে তার সাথে খারাপ আচরন করতাম না। এজন্য আমার মা আমাকে বউ পাগল বলতো। আর গ্রামের মানুষ আমাকে মাঝে মাঝে হিজলা বলেও ডাকত ।

মহিলার প্রতি স্বামীর ভালবাসা

মহিলার স্বামী আরো বললেন, “আমি আমার স্ত্রীকে এতটা ভালবাসতাম যে তাকে আঘাত দিয়ে কথা বলা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাই তার কটু কথা সবসময় হজম করতাম কিন্তু আমার খুব কষ্ট হতো।”

কথাগুলো বলেই সেই মহিলার স্বামী চোখ দিয়ে পানি ছেড়ে দিলেন এবং বলতে থাকলেন, আমি তো কখনো তাকে মুখে বদদোয়া দেয়নি। তাহলে তার এমন হচ্ছে কেন?

তারপর লোকজন বলতে লাগলো আপনাকে কষ্ট দেওয়ার কারণেই আপনার স্ত্রীর আজ এই দুরবস্থা। আপনি বদদোয়া দেননি কিন্তু একজন স্বামী হিসেবে আপনার অন্তরাত্মা কষ্ট পেয়েছে তার আচরণে।

আপনার উচিত এখন তাকে মাফ করে দিন আর তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। এরপর মহিলার স্বামী আল্লাহ তায়ালার নিকট মোনাজাতের মাধ্যমে হাত তুলে দোয়া করতে লাগলেন। তার সাথে উপস্থিত সবাই হাত তুলে মোনাজাত করতে লাগলেন।

স্বামীর মোনাজাতে মহিলার পাপমুক্তি

মহিলার স্বামী দুই হাত তুলে বলতে লাগলেন, “হে আল্লাহ! আমি আমার স্ত্রীকে মাফ করে দিয়েছি। অতএব, আপনিও তাকে মাফ করে দিন। সেই সাথে কবরের সকল আজাব থেকে মুক্তি দিন।”

আপনারা হয়তো বিশ্বাস করবেন না, সেই মহিলার স্বামীর দোয়া শেষ হবার সাথে সাথে সেই বিষাক্ত ও ভয়ঙ্কর সাপ টি কোথায় যেন হারিয়ে গেল। সকলের পেরেশানী দূর হলো এবং সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সে প্রকৃত মুসলিম হতে পারে না যার জিহ্বা এবং হাত থেকে অপর মুসলিম নিরাপদ নয়।

শেষ কথাঃ

আমাদের মনে রাখতে হবে যে জিব্বা দিয়ে যে আঘাত দেয়া হয় তা বিষাক্ত সাপের বিষ থেকেও আরও ভয়ংকর। মানুষের শরীরে হাত দিয়ে আঘাত করলে সে ব্যথা কিছুদিন পরে ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু জিহ্বা দ্বারা যে আঘাত করা হয়, সে আঘাত কখনোই যায়না।

জিহ্বার দ্বারা আঘাত মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত মানুষের অন্তরে থেকে যায়। তাই কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকলে তাড়াতাড়ি ক্ষমা চেয়ে নিন।

বিশেষ করে পিতা-মাতা অথবা স্বামীকে কখনোই অন্তরে আঘাত দিয়ে কথা বলবেন না তারা বদদোয়া দিলে আপনার জন্য সেটা অবশ্যই অনেক বড় ক্ষতির কারণ হবে

নবীনতর পূর্বতন